Agony Opera
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
Search

নবীনা   দাসের   কবিতা ।। নির্নিমেষ   ভট্টাচার্য

7/4/2019

2 Comments

 
Picture
[কবি নবীনা দাসের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গৌহাটিতে। নবীনা ২০১৭ সালে সাহাপেডিয়া-ইউনেস্কো ফেলো হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০১২ সালে তিনি ছিলেন স্টার্লিং বিশ্ববিদ্যালয়ের চার্লস ওয়ালেস ক্রিয়েটিভ রাইটিং অ্যালমনাই এবং ২০১৬ সালে কমনওয়েলথ রাইটার্স অর্গানাইজেশনের ফিচার কোরেসপন্ডেন্ট। উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ- ‘ইনটু দ্য মাইগ্রেন্ট সিটি’( ২০১৩) এবং ‘ব্লু ভেসেল’(২০১২)। প্রথম উপন্যাস ‘ফুটপ্রিন্টস ইন দ্য বাজরা’(২০১০) এবং প্রথম ছোটগল্পের সংকলন ‘দ্য হাউজ অফ টোয়াইনিং রোজেস’(২০১৪)। নবীনার কবিতা ক্রোয়েশিয়ান, ফরাসী, বাংলা, মালয়ালম এবং ঊর্দুতে অনূদিত হয়েছে। প্রসঙ্গত নবীনার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘সংস্কারনামা’ ওপেন ম্যাগাজিনের নিরিখে ২০১৮ সালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হিসেবে আলোচিত হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থে উঠে এসেছে দেশের সমসাময়িক রাজনীতি এবং তৎসহ কবির নিজের প্রতিবাদী অবস্থান। অনূদিত কবিতা চারটিও ‘সংস্কারনামা’ বইএরই অংশ।]


সবাই যখন একটা নাম চেয়েছিলো/ When Everyone Asked for a Name
 
১৬ বছর বয়সে খুন হওয়া জুনায়েদ এবং তার হত্যার পরে জ্বলে ওঠা ‘নট ইন মাই নেম’ আন্দোলনকে উৎসর্গ করে
 
রেলওয়ে স্টেশনে একটা সাধারণ গ্রীষ্মের দিন
ঘুম আর জেগে থাকার ঠিক মাঝামাঝি একটা সময়
আকাশ জুড়ে দলা দলা ভাতের মত সাধারণ আকারের মেঘ
মৃদু হাওয়া, যা কিনা গ্রীষ্মের তথাকথিত লাবণ্য
ট্রেনের আনুষঙ্গিক এই ভালোবাসা এক অন্তহীন গল্পের মত
কিন্তু মুখে রক্তের ভালোবাসার দাগ অসাধারণ ও বীভৎস--
আর লোকগুলো জিজ্ঞাসা করেঃ তোমার নাম কি জুনায়েদ?
 
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন্
 
আমি খবরে দেখছি এই নির্জীব আধ-শহুরে রেল কামরা
আমি তাকিয়ে আছি ঘাতকের চোখ নিয়ে, উগ্রবাদীর নাক নিয়ে
আমি তাদের মতই সেই এক সস্তা সিগারেট টানছি
আর আমি সেই দশাসই লোকগুলোর মতোই বেপরোয়া উগ্রতায় মত্ত
আর এক মুহূর্তে রেললাইনের সব দুর্গন্ধ ছাপিয়ে যায় মানুষের স্বেদ্গন্ধ--
আর আম্মা প্রশ্ন করেঃ জুনায়েদ কোথায়?
 
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন্
 
 প্রতিদিনের মত ঢিমেতালে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত
যা সরে সরে যায় মুখ, অবয়ব আর ময়লা টুপির উপর দিয়ে
যা কিশোরের ঈষৎ ছোপ ছোপ চিবুকের উপর টোকা মেরে যায়
স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকে অদৃশ্য শিশু-নারী-বৃদ্ধের স্থানুবৎ ক্যানভাস--
অথচ কেউ প্রশ্ন তোলেনাঃ এই কি জুনায়েদ?
 
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন্
 
সবকিছু মেঘের মত দলা পাকানো, ভাঙ্গা কোলার বোতল
চলন্ত জানলা থেকে ছুঁড়ে ফেলা ভাঙ্গা মাটির চায়ের ভাঁড়
দখিনা হাওয়া মেখে নেওয়া একটা রক্তাক্ত সিটের কোণা
আর বিলাপের মত জেগে ওঠা মারু বেহাগ--
কেউ কি জিজ্ঞাসা করেছিলোঃ তুমিই কি জুনায়েদ?
 
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন্
 
লোহার চাকার শব্দ আর পুদিনার গন্ধ মিশে যাচ্ছিলো বাতাসে
প্রাচীন পাথরগুলির গায়ের শ্যাওলা ছুঁয়ে ফেলছিল মশলা আর থুতু
আর তারপরই জিভে নোনা স্বাদ, দাঁত বেয়ে ধীরে ধীরে ঘামের চুঁইয়ে পড়া
হৃদপিণ্ডের ঠিক ভেতরে। আর তারপর সব থেমে যায়। শুধু একটা কর্কশ খুলিফাটা শব্দ ।
আর আমরা সবাই তাকিয়ে আছি জুনায়েদের দিকে।
 
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন্
 
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজি’উন: আমরা আল্লার অংশ, তাঁর কাছেই আমরা ফিরে যাবো)
 

অস্তিত্বের কারণসমূহ/Reasons for Existing
 
শুধুমাত্র বৃষ্টি আসে বলেই
এমন নয় যে আমাদের কান্না থেমে যায়
 
শুধুমাত্র সূর্য ডোবে তাই
এমন নয় যে আমাদের রক্ত শোধিত হয়ে যায়
 
দরজায় দরজায় ঢ্যারা কাটা
কেউ একটা নিখোঁজ
আলিবাবার গল্পের মত
আমরা খুঁজে চলেছি কোথায়
তার শেষতম অভিব্যক্তি ভেজা ছাপ রেখে গ্যাছে
 
শুধু একটা দরজা আছে বলেই
এমন নয় যে সে স্বেচ্ছায় চলে গেছে
তার পায়ের চিহ্ন পাওয়া যায়নি
টেবিলের উপর একটা কলম রাখা
যেখানে ‘ভালো আছি’ লেখা শেষ কাগজটা
আনমনা হাওয়ায় উড়ছে
 
                                                                        শুধুমাত্র রাত্রি আছে বলেই
                                                                        এমন নয় যে অন্ধকার দিনের কাছে যায়
 
সন্ধ্যের ব্যস্ততায়
গঙ্গা ধাবায় চায়ের কাপে টুংটাং
আধপোড়া সিগারেটের প্রান্ত জ্বলে ওঠে
নিঃশেষ হয়ে ছুঁড়ে ফেলার আগে
বর্ডার আর ব্যান্ড নিয়ে ছাত্রদের  আড্ডা জমে ওঠে
যুগলেরা পরস্পরকে ছুঁতে চায় ভোর হওয়ার আগে
শুধু গোধূলিতে হারিয়ে গ্যাছে একটা মাত্র নাম
 
বিস্মৃতি আছে বলেই
এমন নয় যে স্মৃতি ঝরা পাতার কাছে যেতে পারেনা
আম্মা ফিসফিস করে ওঠেঃ ‘নাজীব, মেরা বেটা’
তার নামে শূন্যে মুঠো তোলে বন্ধু
চারটে দেওয়াল মনে রাখে তার ছায়া
জুতো, বইয়ের তাক আর ঘড়ির টিকটিক শব্দ--
একা একটা ক্যালেন্ডার পাহারা দেয় একটা হারিয়ে যাওয়া নাম



দেশদ্রোহের সামগান/ Hymn of the anti-national
 
আমার প্রেমিকেরা সব দেশদ্রোহীর দল
চোখ তাদের পাথর বসানো তামা
নোনা জিভ আরাবল্লীর শ্রেনী
আমার উদ্দেশ্যে গাওয়া
প্রত্যেক প্রেমের গানের সাথে
রামের পিছনে ধাওয়া করে যায় জয়
ঈর্ষায় মরে শ্রী--
এই কোলাহলে জেগে থাকে আরো কতো...
কারণ, ‘আচ্ছে দিন’ কি শুধু
সুবিধেভোগীর জন্য আসে?
একটা জাতিবিরুদ্ধ দিন কি
আমাদের এনে দিতে পারে
অনন্ত বসন্ত?
 
আমার পোষ্যরাও এখন দেশদ্রোহী
তাদের জল্পনায় উঠে আসে ব্যক্তিগত অধিকার
আর তারা মন্ত্রণা করে কীভাবে এই
মানবতাহীন মানুষগুলোকে সরিয়ে
ওরা হেডলাইনে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে বেড়াবে
বিতর্ক ওঠে সপ্তম সুরে-
যেদেশে ঈদের পাঁঠার জন্য সবাই হা হুতাশ করে
সেদেশে মনে হয়না কেউ জানে
রোহিঙ্গারা কারা
 
আমার কলমও এখন পুরোদস্তুর দেশদ্রোহী
বিদ্রোহী কালির রেখা বেয়ে শোকগাথা লিখে যায়
ভীষণ রাগে স্লোগান তোলে
আর ভালোবাসার সময় এলে
কলম স্নিগ্ধ আইভি কিম্বা রোদ্দুর হয়ে ওঠে।
আমার কলম সরকারী নোটিসের নির্দেশ মানেনা
দুরন্ত আঙ্গুলগুলো নিশপিশ করে উঠে
ছোঁয় মোবাইলের আশ্চর্য প্রদীপ
 আর লিখে ফ্যালে ‘বিপ্লব’
 
আর তারপরই হঠাত শব্দটা হয়ে যায় ‘প্রেম’
--আরেকটা রাষ্ট্র-বিরোধী ‘সেভ’।



সীমান্তকৃত/ Em-bordered
 
বিষাদ আর আমি দুই প্রেমিক
 
আমাদের মিলন ভিন্ন দুই যুগের যুক্তির মতন
আমাদের মিলন ইতিহাসের ফজর আর গোধুলির মতন
 
আমাদের পূর্ব-নারীদের ইতিহাস আমাদের বালিশের গায়ে কাশিদা করা
 
বিষাদ যাত্রা করেছিলো খাম্মাম থেকে ওয়ারাঙ্গুলে/ লাহোর থেকে
লুধিয়ানায়/ সুনামগঞ্জ থেকে সুয়ালকুচিতে। কেউ ছিলো না ট্রেনে।
ইতিহাস ছিলো এমন এক মহাকাশযান যেখানে মানুষের আনাগোনা
শুরু হয়নি। সময় ছিলো মধ্যরাতের পরিণাম/ কিম্বা দুপুরের।
ঘড়ি ছুটে চলত সারাক্ষণ। মৃত্যু সাঁতরে বেড়ায় যে অন্ধকারে
তার গা ঘেঁষে বিষাদ পেরিয়ে গিয়েছিলো আমাদের প্রদেশের সীমানা /
এই তো কদিন আগে। একটা ঘূর্ণাবর্ত এলো। মৃত্যু রয়ে গেলো/ মরল বিষাদ।
সঙ্গে নিয়ে গেলো শত শত প্রাণ। ছিন্নভিন্ন দেহ/ আমাদের মহাকাশযানে।
তাদের শরীরের প্রত্যেকটা ক্ষতচিহ্নের নাম সীমান্ত। আমি বিষাদের জন্য কেঁদেছিলাম।
 
আর তারপর সীমান্ত-রক্ষীরা য়ামাদের বলেছিলো
কুমকুম ফুটেছে
যেখানে
 
/রক্ত/
/ঝরে/
/পড়েছিলো/


2 Comments
Rimi Mutsuddi link
12/4/2019 23:15:21

পড়লাম। কবিতাই পারে কোনো জ্বলন্ত জরায়ু থেকে ভ্রূণপুষ্প গর্ভের আর্তনাদকে তুলে আনতে। শুনতে বাধ্য করাতে।
অনুবাদের সাথে মূল ইংরাজি কবিতাগুলো দিলে ভাল লাগত।

Reply
Utpal B
13/4/2019 14:41:03

You are amazing .i knew .i want more .i want ........all amazing things you weave.

Reply



Leave a Reply.

    Archives

    February 2021
    December 2020
    November 2020
    September 2020
    August 2019
    June 2019
    April 2019
    February 2019
    December 2018
    October 2018
    August 2018

Proudly powered by Weebly
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন