Agony Opera
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
Search

দুটি  অণুগল্প  ।।  অনুপম   মুখোপাধ্যায়

13/2/2021

0 Comments

 
Picture


​

সালোমে

এ সময় কুয়াশা তীক্ষ্ণ হয় না। পেলব হয় না। কেবল কোনো দূর সীমান্তে কুকুরের মৃত্যু হলে, তার গন্ধ আরো গাঢ় হয়ে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। পায়ের তলায় রাস্তা থাক, বা ফুটপাত, হাঁটতে হাঁটতে সেই ঘ্রাণ টের পাওয়া যায়। সেই ঘ্রাণকে অতিক্রম করার জন্য হাঁটার গতি বাড়িয়ে নেওয়া যায়, অথবা, একটু থেমে, সেই ঘ্রাণকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টাও করা চলে। 
    এই শহরে আলোর সংখ্যা বেশি। কিন্তু কোনো আলো তীব্র নয়। এক অদ্ভুত আলোছায়ার সৃষ্টি হয় শীতকালীন সন্ধ্যা সাতটায়। গলিগুলো আরো মোহময় হয়ে ওঠে। যেন সেগুলোর মধ্যে ঢুকলে, খোলা নর্দমার গন্ধের মধ্যে, সান্ধ্য রান্নার শব্দের মধ্যে, একজন পরিচিত লোকের সঙ্গে দেখা হয়েই যাবে, আর তার সঙ্গে রাজনৈতিকভাবে একমত হওয়া যাবে, ভিন্নমত হওয়া যাবে, সে অকারণে আপনাকে বাড়িতে ডাকতেও পারে এক কাপ চা খেয়ে যাওয়ার জন্য। 
    এমনই সন্ধ্যা সাতটায় আপনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঈশুয়ার কথা ভাবতে পারেন। আপনি যিহূদার কথা ভাবতে পারেন। মাথার উপরে ক্রমেই সম্পূর্ণতার দিকে এগিয়ে যাওয়া চাঁদ আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে পারে কোনো সময় জীবনে আপনি জেরুজালেমের কথা ভেবেছেন কি? ভেবেছেন কি হেরোদের কথা? সালোমে সেই যে নাচতে নাচতে তার লম্পট বিপিতার কাছে চেয়ে নিয়েছিল ইজরায়েলীয় প্রফেটের কাটা মুণ্ডু, ওই চাঁদ কি যোহন দ্য ব্যাপ্তিস্তের সেই মুখের সঙ্গে কোথাও মিলে যায়?
    ঠিক এমন সময় আপনার চোখে পড়বে দুর্বল ল্যাম্পপোস্টের তলায় ক্ষুদ্র ও নির্জন এক হারমোনিয়াম দোকান, সেখানে হারমোনিয়াম তৈরি হয়, ভাঙাচোরাগুলোকে সারানো হয়। তার সামনে এক মলিন লাল নাইটি পরা উজ্জ্বল কিশোরী, গায়ে ম্লান লাল সোয়েটার, একটা ফোন নিয়ে চুপচাপ কথা বলছে সতর্ক চোখে। গায়ে হলদেটে আলো পড়েছে।
    ওর কাকার দোকান। তিনি ওকে একটু বসতে বলে রাতের খাবার কিনতে গেছেন।
    সবুজ ময়লা লুঙ্গি পরে।  




ফুলস্টপ

শুধু একটা শ্রেষ্ঠ ফুলস্টপ পেতে চায় বলেই একেকটা সেনটেন্স নিজেকে থামিয়ে দ্যায় না, বিষ খায় না, সিলিং ফ্যানে ঝুলে পড়ার জন্য দড়ির খোঁজ করে না। একটা সেরা এবং চরম ফুলস্টপের খোঁজ। প্রত্যেকটা সেনটেন্সই অথচ জানে, যখন বলা ফুরিয়ে যাবে, ফুলস্টপটা ঠিকই বসে যাবে। সেটা সেমিকোলন হবে না, কমা হবে না। একটা চরম অপছন্দের ফুলস্টপ সেটা হতেই পারে। একটা ফুলস্টপকে বোঝার জন্যই একেকটা সেনটেন্স সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়ার কথা ভাবে।

    “জ্যোতি বোসকে সামনে পেলে স্তালিন তাঁকে কী বলতেন?”
    “স্তালিনকে সামনে পেলে নেপোলিয়ান তাঁকে কী বলতেন?”
    “নেপোলিয়নকে সামনে পেলে শংকরাচার্য তাঁকে কী বলতেন?” 
    “শংকরাচার্যকে সামনে পেলে সোরেন কিয়ের্কেগার্দ তাঁকে কী বলতেন?”
    “তুই কিয়ের্কেগার্দকে মনে করলি, অথচ দস্তয়েভস্কিকে মনে পড়ল না তোর?”
    “তুই দস্তয়েভস্কিকে মনে করলি, নিকোলাই গোগলকে মনে পড়ল না তোর?”
    “মনে করার সঙ্গে বলার কী সম্পর্ক?”
    “আচ্ছা! তবে এতদূরই থাক। স্টপ!”

    লোকটা একটা কুয়োর দেওয়ালে বসেছিল। একটু সামনের দিকে ঝুঁকে। জোরে হাওয়া দিচ্ছে। পড়ে যাওয়ার ভয় আছে। কুয়োটা খুব গভীর। খুব অন্ধকার। আর ঠান্ডা। একটু আগেই যে লোকগুলো ওর পরিচয় জানতে এসেছিল, তারা কিছুই বুঝতে পারেনি ওর কথা। লোকটা এখনও বসেই আছে, বসে থাকবেও আরো কিছুক্ষণ। আর একটু পরেই শিমুল গাছের ফাঁক দিয়ে ওর মুখে সকালের রোদ এসে পড়বে।
    কোন গাছের ফাঁক দিয়ে সে এসে পড়ছে, এতে সকালের রোদের কিছুই যায় আসে না। 




0 Comments



Leave a Reply.

    Archives

    February 2021
    December 2020
    November 2020
    September 2020
    August 2019
    June 2019
    April 2019
    February 2019
    December 2018
    October 2018
    August 2018

Proudly powered by Weebly
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন