Agony Opera
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
Search

দশটি   কবিতা ।। অতনু   সিংহ

16/12/2018

0 Comments

 
Picture

কালেক্টিভ আনকনশাস

স্মৃতি একদিন প্রত্নসম্ভার হয়ে যায় 
তার দরজার কাছে বসি, 
শুনি নুপূরের শব্দ, শুনি 
চাবুকের সপাৎ, 
হয়তো বা কৃষকপ্রজার লাশ বুকে নিয়ে 
খাড়ায়ে রয়েছে দেওয়াল! 
তবু এক কিশোরীর মুখ মনে পড়ে, 
এমনকি কন্ঠও তার!
ভোরবেলা তার সুর ভেসে যেতো মেঘনা নদীর গাঁয়ে
সোনার গাঁয়ের মেয়ে, 
তাহার বরণ সোনার মতোই,  
হারমোনিয়ামে সুর রোদের আলতা 
সেও আজ প্রত্ন হয়ে গেছে, 
বন্ধ দরজার ওপাশে জমাট ছায়া, 
হয়তো বা কোনো স্মৃতি নেই আজ আর 
সোনারগাঁয়ের সন্ধ্যায় 
শুধু আমি আছি আর নদী আর সিগারেট!
আর এই হাওয়া, বৃষ্টিবাদলে  

ক্যাম্প

ধরো চিত্রবহুল 
এই সংসার,
তাঁবুর সিনেমা ভোর ভোর 
মারফত হয়ে গেছে
তার নুপূরে
তন্দ্রা ঘনায়
আলো হয় উঠোন
তার নৈঋতে ডাক ওঠে
ডাকচিঠি
আলাপ ছোঁয়ার
তার জানালা আওয়াজ
ছায়াঘর ফিসফিস
বন্দুক রাখা রাজকীয়
সঙ্গীত ওঠে ধরো
খঞ্জনি
সানাই সানাই নহবত
আর চুপচাপ
চিলেকোঠা 
ঘুমরাতে যেমন 
      জলের স্বভাব

তুমি‌ স্নান 

দশমী পেরিয়ে যাওয়া জলরেখায় একটা সূর্য ওঠে, লাল। এই ভোরবেলা হয়তো কোনো তানপুরা জেগে ওঠে! হেমন্ত পাক খায় ঝিলপাড়ে-- আর আমাদের আশরীল কবিতা পায়, আমরা কেউ কেউ কবিতার মতো কিংবা ধরো একা একা নিজেরাই কবিতা হয়ে যাই! তারপর ভোর আসে আমাদের, গাছেদের ফিসফাস শুনতে শুনতে কোলবালিশ টেনে ঘুমিয়ে পড়ি আমরা। তুমি চিরায়ত, তুমি স্নান, তুমি গোসলের কলঘরে আয়নায় কাজল টানো। আমরা ঘুমিয়ে পড়ি আশ্বিনে, চোখের পানি নিয়ে, চোখে হেমন্তের সুর্মা নিয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়ি।  ঝিরঝির শিশির পড়ে ভোরবেলা, আমরি সোনার বাংলায়।


পূব ও পশ্চিম

বৃষ্টি ও যমুনায় পূবের সজল
দেখিয়াছি এইবার দেশের বাংলায়
যেন ঘুম থেকে উঠে
স্নানিয়ে নিয়েছেন কিশোরী
তার বেণী কালো
ফিতা লাল
তার ফ্রক সবুজ
আমাদের ক্ষেত, মাঠ, বৃক্ষলতার
আলো নরম নরম...
শাকান্ন নিয়ে ব্রিজ পার হয় ট্রাক
আজ শুক্রবার
জুম্মার আজানে ভিজেছে শরৎ
কিন্তু আজ উমা আসবেন সন্ধ্যায়
রেলের জানলা দিয়ে
উমা নদী দ্যাখে
জল বহে, মিঠাপানি বয়ে যায়
বৃষ্টি ও যমুনা
আমাদের উমা
যেন যমুনায় রাধারানী
সেই মুখ দেখিয়াছি এইবার
নাম তার ফতেমা
ফতেমা নবীর মেয়ে
ফতেমা আম্মা আমাদের বাংলা,
গিরিরাজ কন্যা 
বাংলার উমা 
এই দেশ তার নোলকের
তাহার খেলনাবাটির
এই দেশ অন্নপূর্ণা
বৃষ্টিতে আসবেন উমা
নৌকার গান হয়ে,
পূব মেখে আমিও ফিরি আমার
পশ্চিম বাংলায় 

সিনেমা 

হে, লুনাটিক হতে চাই যে! অথচ এসি বাস ও তাহার উইন্ডো ডিসিপ্লিনে শহরের ফেড-ইন ফেড-আউট পার হয়ে যায়, কয়েকটি ক্রস ডিজলভে কয়েকটি মুদ্রার হাহাকারে মনে হয় কী যেন করার কথা ছিল-- তবু তো হে, চাঁদ টিপ দিয়ে যায় না আর! মানুষ মদবিহীন, মানুষীবিহীন আর প্রকৃতিরা ডানাবিহীন, পুরুষবিহীন ঘরে ফিরে আসে! কোথাও চাঁদ লাগে না। শুধু এই ঘরে ফেরা থেকে ঘরের বাহিরপানে একটি একান্ত সিনেমা ফুটে ওঠে, অতঃপর ঘুমের ভিতর প্রবল রক্তচাপে সিনেমাও অস্ত যায়!

 
সিটি নোটবুক

সেই ক্লাউনের কথা ভাবো
যে কিনা টুকরো ভাঁড়ামি বেচে 
ময়লা পড়া হলুদ পর্দার 
ভিতরে ঢুকে যায়,
আলোধোয়া ভাত খায়
গোরুর গরম ভুনা
পানি দিয়ে মুখ ধোয়
আয়নায় দেখে নেয় দাঁত!
বাইরে তুষারপাত
ফিটন গাড়ির গতি বাড়ে অকস্মাৎ!
ক্লাউনেরও বাঁশি পায়
গাঁজার গন্ধে ঘুমিয়ে পড়ে সে
বাইরে বৃষ্টি হালকা
ধরো তারপর শীতকাল
এগিয়ে আসে ঢাকা নামক প্রাচীন শহরে 

বিকেলবেলায়

এই কাচঘেরা বিকেলে 
এই স্ক্রিনে ডোবা বিকেলবেলায়
খালি খালি ঘুম পায়! 
ঘুমের ভেতর খোলাছাদ
ছাদের আকাশপথে 
সাদাভাল্লুকের ডেরা,
ডেরায় ডেরায়
কত রঙ কত ঘুড়ি
উড়েছে অনর্গল
যেন ইস্কুল ছুটির পর
একান্ত গ্রহের ঠিকানা পাওয়া গেছে...
কিংবা কাদামাঠ, রেললাইন,
লালবল গড়িয়ে গিয়েছে সীমানায়
সীমানার ও-পাশে অফিস
বড়বেলা, শীতাতপকুয়াশায়
স্ক্রিনে ডোবা বিষাদ কেবিন!

জ্বর 

ধরো সন্ধ্যার আকাশ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে আগুনের ঝড়
আমি শুয়ে শুয়ে দেখি 
আমাকে সাজিয়ে দিয়েছো তোমরা পীতাম্বর ফুলে!
টাইপ করার অভ্যেস ছেড়ে আমি হাতে নিয়েছি কাগজ  
টেলিফোন করতে ইচ্ছে করছে না মাকে, তিথিকেও নয়। 
তবে লিখছি, আগুন নিয়ে খেলার সাধ ছিল ছোটবেলায়, 
দোলের আগের দিন ওই যে হলুদ 
রঙের এক ন্যাড়াপোড়ানোর খেলাধুলা
কিংবা যে বাঘিনী ডোরাকাটা, 
হলুদ বনের ভিতর তার সাথে ভাব 
তাকেও তো জলরেখা বরাবর শুনিয়েছি গান
তার পিঠের উপর রেখেছি হাত, 
বলেছি, বৃষ্টি এলে সহজ জলের ধারে আমরাও নীচুস্বরে কথা বলে নিতে পারি
যদি-বা রোমকূপে ঢুকে পড়ে শূন্য হেমন্ত, 
বিশ্বাস করো, তোমার কাজল ছুঁয়ে কসম
আদরের পশম পেলে আমিও তো ভালো ছেলে হয়ে... 
যেভাবে ভালো হয়ে যেতে চাই আজন্ম মাতৃঋণের কাছে--
গীতা দত্তের গান মাথার ভিতরে উঁকি দিয়ে যায়!
এই যে আগুন নিয়ে খেলতে খেলতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম 
এখন ঘুম ভেঙে দেখি আগুনের ঝড়, 
আগুনের রাক্ষস, 
তাদের সৈন্যদল উড়ে যায় মাথার উপর দিয়ে
আমি নিজেকে লুকোতে চাই, আমি পানির অন্ধকারে ডুবে যেতে চাই... 
এখন অনেক পানি মাথার উপর, 
জলের নিচে শুয়ে শুয়ে আমি লিখতে চাইছি--
যদি জ্বর আমার ঘরের মতো মৃদুঝিম নিয়ে, 
ছোটবেলাকার সাইকেল টুংটাং নিয়ে 
কিম্বা সরিষা ক্ষেতের উপর ঝরে পড়া কালো-লাল কালো-লাল ডোরাকাটা মাফলার... 

ঘুম ভেঙে দেখি জানালায় এক ইঞ্চি আকাশ অন্ধ হয়ে গেছে, 
ঘরের আলো নেভানো, একটাও সিগারেট নেই 
তবে ইনবক্স আলো ক'রে তিথির মেসেজ এসেছে একটা। 

পীতাম্বর ফুলেল এক সাজে ধরো 
আমিও লায়েক হইছি আজ
জাদুর এই হাটবাজারে পুড়ে যাবার আগে, ডুবে যাওয়ার আগে, 
ধরো সবারই যেমন সাধ হয় কিছু লিখে রাখবার। 

আয়না

জ্বর ও ছয়তলার নিঃসঙ্গতা ভালোলাগে। 
মাঝে মাঝে সুরমার গান,
সুরমার গান ভালোলাগে। 
একটাও আয়না নেই ঘরে 
অথচ একটা সময় আয়নার সামনে
চুপিচুপি কতো কী বলতাম 
সেবারও এক কার্ত্তিকে
আচ্ছন্ন ছিলাম ধুমজ্বরে
ওষুধ ছাড়াও মা মসজিদ থেকে
নিয়ে আসতো পানিপড়া শিসি
লাল শিসি, খয়েরি শিসি
তখন চারপাশে অনেক আয়না
আয়নার ভিতরে আমি, বাইরেও আমি 
আমাকে ঘিরে থাকতো কতো কতো চোখ
এখন আয়না নেই ছয়তলার চিলেকোঠায়
এখন সুরমার গান আসে মেসেঞ্জারে
গানের ভিতর সুরমাকে ভালোলাগে
গানের বাইরে সুরমাকে ভালোলাগে
মিনারের নিচে তিথির কাজলরেখা
তাও জ্বরের ভিতর মনে পড়ে যায় 

চিরকুট 

আকাশ থেকে 
টুপ 
টুপ 
রক্ত পড়ছে
অন্ধকারে ধরিয়ে নিয়েছি বিড়ি,
কবিতা লিখবো না আর
পাঁচতলার সিঁড়িতে অপেক্ষা করব মৃত্যুর।
আমি পুড়বো না, যদিও
কবিতা পুড়বে
বাঁধাঘাটে হয়তো বা 
অথবা পোস্তগোলা শ্মশানে
হেমন্তের চিতায়!
কুয়াশার দিনকালে  
ভেসে যাবো শাপলা ফুলের পাতায়--
মাথার ভিতর ভাঙা রেললাইন নিয়ে
ভূতুড়ে ব্রিজ নিয়ে 
গলির অন্ধকার নিয়ে
মদের প্রলাপ নিয়ে  
চিলেকোঠার ছাদ নিয়ে 

সকালে কাহার আলতা রাঙা পায়ের ঘুঙুর নিয়ে 
রক্তমেখে ঘুমিয়ে থাকবো সারাদিন 
কবিতা লিখবো না আর 
আমি পুড়বো না
কবিতা পুড়বে আমার 
বাঁধাঘাটে হয়তো বা 
অথবা পোস্তগোলা শ্মশানে
0 Comments



Leave a Reply.

    Archives

    February 2021
    December 2020
    November 2020
    September 2020
    August 2019
    June 2019
    April 2019
    February 2019
    December 2018
    October 2018
    August 2018

Proudly powered by Weebly
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন