Agony Opera
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
Search

রোড   ট্রিপ ।।  সম্বুদ্ধ  ঘোষ

3/8/2019

0 Comments

 
Picture

১
খুব ভ্রাতৃবৎসল বুঝি তোমাদের ঐ নিকুঞ্জ পান্থনিবাস? 
সংশয়-সেতু পেরিয়েই পাব খোয়া আর মোরামের পথ,
পরার্থপর তার যত রোগ-নিরাময়;
 
ভিজে ঘাস থেকে ধীরে, ঘাসেদের পশমশরীরে
ঘড়ির ঘন্টায় ছড়িয়ে পড়ছে বিকেলের রোদ,
ঘনসন্নিভ শাল্মলীমর্মর আর মাথার উপর শীর্ষনীল,
আমি প্রবাসের হাইরোডে দাঁড়িয়ে এখন হাত নাড়ছি,
অতর্কিতে দেখছি ঝাকানাকা সেলুনের মায়াডোর,
মাটিতে টায়ারদাগের টানাপোড়েন, ভূ-পরিমিতি
 
এবং আমারই চোখের সামনে দৃশ্যাদৃশ্যের ভিড়ে,
আমি দেখছি গ্রীষ্মবাতাস পিয়ালশাখ সব বনে
ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়েছে ভিন্নভিন্ন নৈঃশব্দের শব,
আমি পর্যটনশিল্পের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভ্রম চিনে রাখছি,
আমার হাতের কর ছুঁয়ে একে একে গুণে রাখছি
বস্তুব্যপক ট্রাক, ঢালাইমেশিনের অচ্ছেদ্য ধ্বনিগুলি
বর্ণপরম্পর সুতোবিন্যাস,পাথরকুচির রিদমজ্যামিতি
অবুঝ পথচারিতায় হারাচ্ছি পথ থেকে বন-গুহাপথ,
 
এভাবেই হারাচ্ছি রাস্তা, ধীরে ধীরে বেলা পড়ে এল,
ভ্রাতৃবৎসল তোমাদের ঐ নিকুঞ্জ পান্থনিবাস চলো।
 
২
পাতাকুড়োনো বেলায় পৌঁছবে 
তোমার বন ও আরণ্যসম্পদে,
 
এমনই কিছু তপোবন রয়ে যাবে থেকে যাবে, 
মাঘসূর্যে ও নিকষনিশীথে এইসব কথা ভেবে 
হৃদয়ঘনিষ্ঠ মেট্রোপোলিস থেকে দূর-দূরান্তের ট্রেনে,
ভোরে উঠে বেরিয়ে পড়বে কারা অনিকেত নিখিলের পথে 
করুণাহত পাদ্রীর থেকে, বণিকের জিগীষার বেশি জেনে। 
 
আমরা ডেনিম গুটিয়ে জংলা হল্টটিতে নামি, চেয়ে দেখি
পিছনে পিঙ্গল বিধুর ক্ষেত, ডাঙশ ফিশপ্লেটে ফুটেছে কল্কেফুল,
লতার মত পাকানো রেলবাঁক; যত আবছা মাইলফলক,
যত ছিল মনোনীত অফিসঘর, লাল সুরকির রেলইয়ার্ডে 
দু'তিনটি নিরুপম দোকানঘর জাগ্রত শালগ্রাম হয়ে 
 ট্যুরিস্ট যুবকটির চশমায় আঁকছে মহীয়ান চায়ের রেখা, 
কাত হয়ে শুয়ে আছে নীলবুড়ি, দু'পাঁচটা শীতের হাঁস
জীবনেরই জলছাপ মেখে নিজস্ব স্বনামধন্যতায় লীন।
 
এমনই কিছু তপোবন আমাদের, রয়ে যাবে থেকে যাবে;
যত ব্যসকূট জমে থেকে গেলে স্ফটিকের মত রোদে
একা একা হেঁটে চলা যায়, সেই জলছাপ নিয়ে,
বেরিয়েছি আজকের খোয়াঢালা পথ আর আবাদফসলে।
 
আমাদের হাত থেকে খসে পড়ে ন্যূনতম বাঁশি,
জংধরা ফ্যাক্টরি-দরোজায়, বন্ধ চিনির কলে,
শালপিয়াল আর বিচালিগাদায় সন্ধ্যা পড়ে আসে, 
 বনপথ ভরে যায় প্যামফ্লেট ও রেলরুটচিহ্নে--
 
অরণ্যতক্ষক তবু জানে, এ কেবলই খেলা 
খেলাচ্ছলে ভূমার পৃথিবীকে কমলালেবু বলা, 
ক্ষেতজাঙালের বেতফল, আর অলীক প্রকল্পনা
পাতাকুড়োনো খেলা এ তোমার শুধুই প্রবঞ্চনা।
 
৩
বন-চরাচর বাদামী রোদ নক্ষত্রদের সিঁড়ি
এমন দিনেই বুড়ির পুতুল দিচ্ছে হামাগুড়ি?
ঝড়ের মধ্যে বিষমবেগে পথভোলা এক ঘুড়ি,
পুতুলঘরের ভাঙনকালে ফোলাচোখের বুড়ি।
 
বইল সময় বইল সময় অবাক বনস্থলী, 
বাসিপাতার স্তূপের ভিড়ে শীর্ণ জলিফলি,
নীলশীতল এক ঝর্ণাতলে স্থায়ীর দু'টি কলি
পাকদণ্ডী পথ বেয়ে তার ধীরপায়েতে চলি।
 
দুঃখবাহী সেতুর পথে দুঃখ জমে অপরাপর,
আজো বুড়ি কাঁদে কি তার ভাঙলে পুতুলঘর?
 
৪
ভেঙে পড়ে তছনছ প্রজ্ঞাসৌধ ও প্রত্নতত্ত্বের সোনালি মিনারেট,
তবুও শতাব্দীব্যপী হেঁটে যাব, হ্যালোজেনে মৈত্রেয়নির্দিষ্ট পথে 
সারি সারি ফর্কবেন্ড দেখে বিস্মিত হব ; দীর্ঘদিনের জরায়ু বেয়ে
মানুষের উঠোন-ঘর, গেরস্থালীর ভিড়, হেরোইন ঝুপড়ির ভিতরে
গিয়েছে মিশে যেসব ধূলিমাখা পথ স্থায়ী ও অন্তরাবাহিত সঙ্গীতে।
 
কি নিঃসীম রৌদ্ররাগে তুমি আলোকসামান্য করে রেখেছ গুলদস্তা! 
গণিকার গোলাপি বিষাদের মত আলোয় আজ জেব্রাক্রসিং ঘেঁষে
পকেটে অর্কিড নিয়ে হনহন হেটে গেল যে ঐ লোরেটোকিশোরী,
ভোরে তারও দেয়ালায় সাজাচ্ছো তিনটি পারিজাত ফুল,
বিরহ ও ইন্দ্রিয়নির্দেশের অন্ধকার জাতীয় সড়কগুলি।
 
আর এসবই লিপিবদ্ধ করার মত অনর্থক রেখেছো তুমি 
গাড়ল নভোচারী এক, ছায়ারা কেবলই ছায়াতে মিলায় বলে
তোমার প্রদর্শনীতে টাঙিয়ে রেখেছো কিছু নিঃস্বভাব ছায়া,
কুয়াশা ভেজা ফার্ন-গহ্বর ;বিকেলের সেমেটারী রোডে 
আলো পড়ে এলে ধীরে নেমে আসে যে চাঁদ এক ম্লানকায়া--
 
বিদায় তবে ঝাউবন, নরম হাঁসডিম আর ধবল কবুতরডানা,
বহুঘুম পর দেখা হবে বুঝি, অশ্রুজলে ভেজা আমার বিছানা।
 
৫
নিজস্ব লিখনভঙ্গিটির দিকে তুমি তাকাও সংরাগে,
ছাদের ঘর থেকে আবছায়া হেসে ওঠে কেউ,
শব্দের কোরক ফোটে অর্থবহ ফুলে --
তোমারই অলক্ষ্যে বুঝি ডানা ঝাপ্টাচ্ছো তুমি
ব্যথাঘুমঘোরে সাঁতরে যাচ্ছো অক্ষরদরিয়ার পারে
 
বনভূম বিদীর্ণ করে শিশুদের কলরোল ভেসে এল,
জঙ্গল ডুবে আছে রডোডেনড্রন- বুনো ফুক্সিয়া ফুলে
কোন পাখি দেখেছিলে? কোন স্বর মায়ামৃগকালে?
জ্যা-মুক্ত যতিচিহ্নটি তবে ছুঁড়ে দাও তুমি শব্দতন্তুজালে!
কেমন বুনোট তার? শব্দের সেনোটাফ দিনরাত্রিতলে?
আফিম-সংকেত করে ক্রিয়াপদটি তুমি বাতাসে ভাসালে!
 
যেকটি কৃশ শীতের পাখি উড়িয়ে দিয়েছো এযাবৎ, 
উজ্জ্বল কাগজের আকাশ থেকে আকাশলীন হয়ে
এইবার তারা উড়ে মিশে গেল ব্রিজ-কোলাহলে,
 
নিজস্ব লিখনভঙ্গিটির দিকে তাকালে তুমি মৃদুহাস্যরোলে,
জানালার ঘষাকাঁচে বাষ্পিত প্রশাখাবেণী বেয়ে
রাত্রি বুঝি নেমে এল হিম-অন্তরালে।
 
৬
শোকাকুল পাখিদের নিবিড়ে,
সকল সন্দেহাতীত জঙ্গলের বিকেলে
একা বসে আছি। 
ক্ষেমসূর্য ঢলে পড়ে শেষ তাপবিকিরণে। 
 
তারপর নেমে এল ফুল
সরলরৈখিক পোকাদের অবয়বে,
আলোর বিলোপ এল,
ক্যাপসুল-নীরবতা, মায়ের অনন্ত কোল,
 
 ঝিঁঝিঁরা দুর্বোধ্য হল ধীরে।
বীতশোক শুকতারাটির নীচে,
দিতি-অদিতির অন্ধকারে ভিজে
একা বসে আছি, পিছলপ্রণয়ে দিনরাত,
 
তারপর অবিচ্ছিন্ন হল
 নোঙরের দড়ি, আমার রাতঝালর
 ভেসে গেল; বুঝি বর্ণহীন আত্মার কোটরে
 বহুযুগ আগে নিভেছে যে স্মিতহাস্য দিন
 
নিরর্থের জলে ডুবে
কোয়া কোয়া কালখণ্ড হয়ে নেমেছে
নিরর্থের একাকীত্ব-লেগুনে, সেইসব
বিনষ্ট জীবন ফের এসেছে জঙ্গলবিকেলে
 
তারপর কিছুক্ষণ গেল,
কিছু কিছু রাত্রিদিন, নত বছরদল--
দূর থেকে আমি দেখি,
মধুমাখা আঙুলের মত আশ্লেষে
 
আমারই অজ্ঞাতে আমার অবয়ব বুঝি
এক ডানাওয়ালা ফেরেশতার মতো
রৌদ্রকরোজ্জ্বলে,
প্রজাপতি হয়ে বসে আছে কোনো
গ্ল্যাডিওলাই ফুলে।
 
0 Comments



Leave a Reply.

    Archives

    December 2020
    November 2020
    September 2020
    August 2019
    June 2019
    April 2019
    February 2019
    December 2018
    October 2018
    August 2018

Proudly powered by Weebly
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন