Agony Opera
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন
Search

সন্ত গোদারের  জন্য  চারটি পেরেক  ।।   অভিজিত   মজুমদার

13/2/2021

0 Comments

 
Picture



১.
হারামিটার গলার আওয়াজ রোবটের মতো
যদিও আমি অতীতে কখনও রোবট দেখিনি।
 হারামি আমি নিজে, ওদের চিনি সেকারণেই।
আমার মতো প্রাণীরা নোনতা আটলান্টিকের
ক্লিভেজে পঁচিশ মাইল দীর্ঘ জাল ফেলে রাখে।
ধরা পড়ে টুনা। বাইচান্স হাঙর ট্র্যাপড হয়ে গেলে
পাখনা কেটে রেখে বডি ছুঁড়ে দেয় জলে। হাঙরের
পাখনা চুষলেই সমাজতন্ত্রী চীনের পুরুষেরা হারানো
জওয়ানি ফিরে পায়। হাঙরের দাঁতের খাঁজে থাকে
ছুপা মর্দানি। এগুলি আসলে মামুলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল
ফিশিংয়ের গূঢ় তথ্য। কিন্তু হারামিটাকে সত্যি সত্যি
বুঝতে গেলে জানতে হবে ঝাঁক ঝাঁক টুনা সম্পর্কে।
ওর টেবিলে পাশ ফিরে শুয়ে থাকা মৃত টুনা রোজ
বলে - ''সাবস্ক্রাইব করুন"।
পর্দা নেই, আমাদের দুজনের চোখেই।

২.
যীশুকে ওরা যখন চাবুক
মারছে, রুখে দিল না কেউ। তাঁর
রক্তমাখা পবিত্র লিনেন শ্রাউড 
কাঁচের বাক্সে রাখতেই, চার্চের কপাল
যাকে বলে - বাসন্তী ভি রাজি, অঔর
মৌসি ভি রাজি। অলৌকিক

ক্রুশ যন্ত্রণা নয় আসলে। অপমান।
এই দেখ, যে ইহুদীর বাচ্চাকে রাজা
বলে ডাকিস, তাকে নিজেই মজদুরের মতো
বইতে হচ্ছে নিজের ভবিতব্য। বলেনি মিডিয়া -
ক্যালভেরি পাহাড়ের দিকে মজদুরের 
অপস্রিয়মাণ সারি; মরে গিয়ে ঈশ্বর হবে বলে

৩.
চামড়ার ব্যাগ আমার নেই, তাই
ত্বকের বিষয়ে জানা হয়নি তেমন

ত্বক  জানতে হলে আগে স্তর
জানতে হয়। স্তর শিখব বলে
পাথর কুড়োই প্রগলভা নদীখাত
থেকে, যেখানে জলপিছু
ট্যাক্স, খরস্রোত, মুখ দেখা যায় না
সাদাটে ফেনার কারণে। হ্যাঁ, লাল রঙা
পাথরও পেয়েছি। এভাবেই তোমার
লিপবাম মনে পড়ে। অন্ধকার
ঘরে জোরালো টর্চের ওপরে আঙ্গুল
চেপে ধরলে যেমন গোলাপি লাল পেতাম
ছোটবেলায়, কেমন স্পষ্ট হোতো শিরা।
রিয়াইন্ড করলে দেখা যায়

শহরের সস্তাদিকে বিশেষ যাওয়া হয় না 
বলে, ভুলতে বসেছি শিরা উপশিরার
কথা। আন্দোলনের নেশা স্তিমিত
হয়ে গেলে, এসো আত্মবিশ্বাসী ত্বক,
আমাকে সবুজাভ নীল
শিরা উপশিরা শেখাও

৪.
রাজহাঁস উড়ছিল। নিচে ছিলাম আমি। ওপর থেকে কী একটা ছুঁড়ে দিল। লুফে নিলাম, দেখি, ফোনের রিচার্জ ভাউচার। এদিকে, আমার তো ফোনই নেই। একটা সিভিক পুলিশ দাঁড়িয়েছিল, ওকে বললাম, আমার ফোন নেই, কিন্তু রিচার্জ ভাউচার আছে।
শুনে, উত্তর না দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষণ। খেয়াল করলাম, মালটা ট্যারা, আমাকে দেখছে না, একটা মেয়ে রাস্তা পেরচ্ছে, সেদিকেই তাকিয়ে। মেয়েটাকে দেখে অবাক হয়ে গেলাম। মানে, মেয়েটার হাতে ধরা ফুলকপি দেখে অবাক হয়ে গেলাম। এই তুমুল গ্রীষ্মে ফুলকপি পেলো কোথায়। 
কোল্ড স্টোরেজের মাল, বলল সিভিক পুলিশটা। অবাক হয়ে তাকালাম ওর দিকে। 
ফুলকপিটা কোল্ড স্টোরেজের, বলল আবার।
এ শালা অন্তর্যামী নাকি, ভাবলাম। সঙ্গে সঙ্গে বলল, হ্যাঁ, পুলিশরা অন্তর্যামী হয়, সরকারের নতুন সার্কুলার এটা।
বললাম, কিন্তু আপনি তো গোটা পুলিশ না, হাফ পুলিশ। 
উত্তর দিল না।
আবার জিজ্ঞেস করলাম, উত্তর দিল না। অদ্ভুত ব্যাপার, মনে মনে ভাবলাম। ভাবা-মাত্র বলল, কেউ মুখে প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়ার নিয়ম নেই। শুধুমাত্র মনে মনে প্রশ্ন করলেই উত্তর পাবেন। আজ এক তারিখ, আজ থেকে এই নিয়ম চালু।
একটা গাড়ি এসে দাঁড়ালো ঘ্যাঁস করে ব্রেক দিয়ে। ঝাক্কাস দেখতে। মিনিবাসের মতো বড় প্রায়। দুটো লোক নামলো গাড়ি থেকে। নেমেই ফুটপাথে শুয়ে থাকা লোমশ কুত্তাটার দিকে মুখ করে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। আমি ছোটলোকদের সঙ্গে মানুষ হয়েছি, আমি 'কুকুর' বলি না। 'কুত্তা' বলি। এতে আরাম পাওয়া যায়। ওই লোক দুটো তিরিশ সেকেন্ড ওভাবে তাকিয়ে থাকার পরে, এগিয়ে গিয়ে কুত্তাটাকে কোলে তুলে গাড়ির পেছনের দরজাটা খুলে ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। কী করতে চাইছে এরা, মনে মনেই ভাবলাম।
সিভিক বলল, এরা কর্পোরেশনের লোক। রোজ বিকেলে কুকুরদের আইসক্রিম খাওয়াতে নিয়ে যায়।
এটা শুনে অবাক হতে গিয়ে হতে পারলাম না, শরীর অবশ হয়ে এলো। দেখলাম কর্পোরেশনের লোক দুটো স্থির হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। ঝুপ করে পড়ে যাওয়ার আগেই ওরা এসে আমায় ধরে ফেলল, ধরে চ্যাংদোলা মতো করে গাড়িতে তুলে দরজা বন্ধ করে দিল। শরীর অবশ থাকলেও, মাথা কাজ করছিল। বুঝতে পারলাম গাড়ির ভেতরটা এয়ারকন্ডিশন্ড। ঘাড় ঘোরাতে পারছি না। চোখ ঘুরিয়ে দেখতে পেলাম, গাড়ির ভেতরে চারটে কুত্তা। চারটেই বিদেশী। গাড়িটা ছেড়ে দিল। মিনিট খানেক পরে শরীরের জোর ফিরে পেলাম। কী করব ভাবছি, তখনই, আমার পাশের কুত্তাটা বলল, হাই মেট।
ভদ্রতারক্ষার খাতিরে বললাম, হেলো।
ফার্স্ট টাইম? জিজ্ঞেস করলো। মাথা গরম হয়ে গেল ইংরেজি ঝাড়ছে দেখে। মাথা ঠান্ডা রেখে বললাম, কীসের ফার্স্ট টাইম?
আইসক্রিম ট্যুরে ফার্স্ট টাইম?
হুম। বললাম, কীই বা বলি আর!
সুস্বাগতম। এবার খাঁটি বাংলায় বলল। বাংলা শুনে মনটা নরম হল একটু। জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা তো সবাই বিদেশী জাতের, রাস্তায় ঘুরছিলে কেন?
বলল, এটাই ফ্যাশন এখন। নেড়িদের বাড়িতে পোষা হয়, আমরা রাস্তায় থাকি, ফ্রিলি মুভ করি।
এই ভ্যানটা এয়ারকন্ডিশন্ড কেন?
আমরা ভালো জাত, এসি ছাড়া পোষায় না।
রাস্তায় তো এসি নেই, তাহলে?
রাস্তায় থাকলে এসি লাগে না, গাড়ি আর বাড়িতে এসি মাস্ট।
এইসব কনভার্সেশনের মধ্যেই গাড়িটা আরও দুই জায়গায় থামল। আরও দুটো কুত্তাকে গাড়িতে তোলা হল।
বসে বসে রিচার্জ ভাউচারের কথা ভাবছিলাম। একটু পরেই আইসক্রিমের দোকান চলে এলো। একজন এসে আমাদের নামিয়ে দোকানে ঢোকাল। দোকানের এক স্টাফ, করপোরেশনের লোকের উদ্দেশ্য বলল, স্যর, একটা কুকুরকে মানুষের মতো দেখতে।
করপোরেশনের লোকটা বলল, ওটা মানুষই।
দোকানটা বরফকলের মতো দেখতে। হিম ঠান্ডা। দোকানের স্টাফ এসে সবকটা কুত্তার পছন্দসই আইসক্রিমের অর্ডার নিল। আমার কাছে আসতেই, বললাম, শোনো ভাই, আইসক্রিম খাব না, অন্য কথা আছে।
আসছি, বলে চলে গেল। ফিরে এসে সবাইকে অর্ডারমাফিক আইসক্রিম দিয়ে আমার হাতেও একটা ধরিয়ে দিল। কালারটা অদ্ভুত। ফ্লেভারটা ধরতে পারলাম না। ছেলেটা নীরস মুখে বলল, বলুন এবার।
বললাম, আমি একটা রিচার্জ ভাউচার পেয়েছি, একটা স্মার্ট ফোনের ব্যবস্থা করে দাও। 
বলল, ট্র্যাপে পড়ে গেছেন দেখছি।
মানে?
মানে, ওরা প্রথমে আপনাকে ফ্রি ভাউচার দেবে, তারপর ফোনও অফার করবে, আর যেই আপনি ফোনটা নেবেন ওমনি ফেঁসে যাবেন।
ফেঁসে যাব! কীভাবে!
ফোনটা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওরা আপনাকে এই আইসক্রিম পার্লারের কাজে লাগিয়ে দেবে। বেরোতে পারবেন না। আমিও ফোন নিয়ে ফেঁসে গেছি। এখানে সারাদিন থাকি, খুব ঠান্ডা। নিমুনিয়া হয়ে যাওয়ার চান্স আছে।
ওটা নিউমোনিয়া, নিমুনিয়া নয়।
আপনি কি মধ্যবিত্ত?
কেন?
ওই যে, সমস্যাতে ফোকাস না করে, ইংরেজি উচ্চারণের কথা ভাবছেন। যাক গে, আমার এখন ডিউটির সময়, চললাম, আপনি আইসক্রিমটা খেতে খেতে মন দিয়ে ভাবুন যেটা বললাম।
চলে গেল ছেলেটা। নামটাও জানা হল না।
হাতে আইসক্রিম এবং মাথায় নিউমোনিয়া আর স্মার্টফোনের দ্বন্দ্ব নিয়ে আমি কুত্তাগুলোর পাশে বসে থাকলাম।



0 Comments



Leave a Reply.

    Archives

    February 2021
    December 2020
    November 2020
    September 2020
    August 2019
    June 2019
    April 2019
    February 2019
    December 2018
    October 2018
    August 2018

Proudly powered by Weebly
  • Home । হোম
  • Blog । ব্লগ
  • Submit | লেখা পাঠাবার নিয়ম
  • Subscribe। গ্রাহক হোন